সন্দ্বীপ একটি যাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাব

September 16, 2018

By Digital Sandwip

সন্দ্বীপ একটি যাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাব

ডাঃ মোঃ রুমী আলম

 

সন্দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী এলাকা। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ম্যাপেও সন্দ্বীপের নাম পাওয়া যায়। যদিও ক্রমাগত নদী ভাঙ্গনের ফলে এর সেই ঐতিহ্য অনেকাংশেই বিলুপ্ত।

একটি দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য যাদুঘরের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্য-সাংস্কৃতিক পটভূমি অত্যন্ত বিশাল। এধরনের বৈচিত্র পূর্ণ তথ্যই একসময় জাতীয় ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে।

বাংলাদেশে ঢাকায় যাদুঘরের পাশাপাশি আঞ্চলিক যাদুঘর তেমন একটা নেই। জেলা পর্যায়ে দু’এক জায়গায় আছে; কিন্তু থানা পর্যায়ে নেই।

সেজন্য সন্দ্বীপের মতো একটি প্রাচীন সমৃদ্ধশালী অঞ্চলে একটি স্থানীয় যাদুঘর থাকা একান্ত প্রয়োজন। যদি আমরা সরকারি উদ্যোগের আশায় বসে থাকি, তাহলে এটি তিমিরেই রযে যাবে। সন্দ্বীপের এমন অনেকেই আছেন, যারা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই একটি যাদুঘর গড়ে দিতে পারেন।

আমি খুব সংক্ষেপে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব রাখছি।

১। ঢাকা ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে থেকে উদ্যোগী কয়েকজনকে নিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হোক।

২। সন্দ্বীপের মাননীয় এমপি মহোদয়, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র এবং স্থানীয় গণ্যমান্য সহ সন্দ্বীপে একটি কমিটি গঠন করা হোক।

৩। দুটো কমিটির সমন্বয়ে একটি তহবিল সংগ্রহ কমিটি গঠন করা হোক। তাঁরা দেশে বিদেশের সন্দ্বীপের বিত্তবানদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ করবেন।

৪। সন্দ্বীপের বর্তমান উপজেলা পরিষদেও আশেপাশে বা অন্য কোন সুবিধাজনক জায়গায় (কিনে বা সরকারিভাবে প্রাপ্ত) অবিলম্বে যাদুঘর নির্মাণের কাজ শুরু করা যেতে পারে। একইসাথে ভবিষ্যতে ঢাকা এবং চট্টগ্রামেও এরকম যাদুঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে, যাতে করে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাদের সমৃদ্ধশালী অতীত জানতে পারে।

৫। প্রাচীন নিদর্শন সংগ্রহ করার জন্য একটি কমিটি করা যেতে পারে। এরা প্রাচীন দলিল দস্তাবেজ, বই, চিঠিপত্র, মুদ্রা সহ বিভিন্ন স্মারক এবং ব্যক্তিগত বিভিন্ন জিনিসপত্র সংগ্রহ করবেন। কমবেশি পঞ্চাশ বছরের বা নিকট অতীতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্মারক যেমন স্বাধীনতা যুদ্ধেও নিদর্শন সংগ্রহে থাকবে।

৬। যাদুঘর পরিচালনার জন্য ট্রাস্টি বোর্ডের মতো একটি শক্তিশালী কমিটি থাকতে পারে যা উপরোক্ত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে গঠিত হবে।

এখানে আমরা সন্দ্বীপে প্রাপ্ত কয়েকটি প্রাচীন নিদর্শন উপস্থাপন করলাম। এগুলো অধুনালুপ্ত আজিমপুর গ্রামের পাহারেরগো বাড়ীর মরহুম মুন্সি আজিজ উল্লার ছেলে আবদুল ওয়াদুদের সৌজন্যে প্রাপ্ত। নিদর্শনগুলো বর্তমানে লেখকের সংগ্রহে আছে। এভাবে আমরা যদি একটি সমৃদ্ধশালী যাদুঘর গড়ে তুলতে পারি, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মমের কাছে আমরা দায়মুক্ত হতে পারবো।

১৮৯৮ সালে (বাংলা ১৮৯১ সাল) আজিমপুর নিবাসী শ্রী রগবত আলীর লিখিত একটি কুষ্ঠী নামা। যেমন এতে লেখা আছে- শ্রী মহম্মদ আসফ সারাং ১। ১২৫২ সনের ভাদ্র মাসের ২৭ তারিখ বৃহস্পতিবার শ্রী মহম্মদ আসফ পয়দা হয়। পিতা মহম্মদ মুনাইম। তখন মুসলিম নামের আগেও শ্রী লেখা হতো।

১৯৬৪ সালে লিখিত একটি পোস্টকার্ড। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের পর সবখানেই উর্দু  চাপিয়ে দেয়ার এটি একটি নিদর্শন।

—————————————————————————————————-

লেখক পরিচিতিঃ বাউরিয়া গ্রামের আলহাজ্ব মৌলভী আছাদল হকের নাতি। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ।

 

Related Posts

অবহলেতি সন্দ্বীপ

অবহলেতি সন্দ্বীপ

ফারহানা ইয়াসমিন রীমা সন্দ্বীপ আমার জন্মস্থান। এই সন্দ্বীপে কটেছেে আমার দুরন্ত শশৈব কশৈর তারুণ্য। বাংলাদশেরে দক্ষনি র্পূব উপকুলে অবস্থতি একটি দ্বীপ,এটি বঙ্গোপসাগড়রে উত্তর র্পূব কোনে মঘেনা নদীর মোহনায় অবস্থতি। লোক সংখ্যা প্রায় চার লক্ষ। পঞ্চদশ...

read more
সন্দ্বীপের পুরনো ম্যাপঃ ১৯১৩-১৯২৯

সন্দ্বীপের পুরনো ম্যাপঃ ১৯১৩-১৯২৯

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ভাষা আন্দোলন বার্ষিকীর সময় প্রখ্যাত কবি হাসান হাফিজুর রহমানের “অমর একুশে” কবিতার কয়েকটি লাইন সবার মনে দাগ কেটে যায়। যেমনঃ- “সালাম, রফিকউদ্দিন, জব্বার কী বিষন্ন থোকা থোকা নাম। এই একসারি নাম তার বর্শার তীক্ষ্ণ ফলার মতো এখন হৃদয়কে হানে;”। ঠিক...

read more